Wednesday, March 12, 2025

বাঁকুড়া জেলার পরিচয় – Bankura District, West Bengal

Explanation of Bankura District in Bengali (West Bengal)

Share

Explanation of Bankura District in Bengali

বাঁকুড়া জেলা (Bankura District)


পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগের অন্তর্গত পাঁচটি জেলার অন্যতম একটি জেলা হল বাঁকুড়া জেলা। দামোদর নদ বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলা দুটিকে পৃথক করেছে। এই জেলাকে “পূর্বের বঙ্গীয় সমভূমি ও পশ্চিমের ছোটোনাগপুর মালভূমির মধ্যকার সংযোগসূত্র” বলে বর্ণনা করা হয়।

মানচিত্র


বাঁকুড়া জেলার প্রশাসনিক মানচিত্র (Administrative Map of Bankura District)
বাঁকুড়া জেলার প্রশাসনিক মানচিত্র (Administrative Map of Bankura District)
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মানচিত্রে বাঁকুড়া জেলার অবস্থান (Bankura District Map)
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মানচিত্রে বাঁকুড়া জেলার অবস্থান (Bankura District Map)

প্রতিষ্ঠিত


বাঁকুড়া জেলাটি গঠিত হয় ১৮৮১ সালে।

আয়তন


বাঁকুড়া জেলার মােট আয়তন ৬,৮৮২ বর্গ কিলােমিটার।

জনসংখ্যা


২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, বাঁকুড়া জেলার মােট জনসংখ্যা ৩,৫৯৬,২৯২ জন।

  • পুরুষ জনসংখ্যা – ১,৮৪০,৫০৪ জন
  • মহিলা জনসংখ্যা – ১,৭৫৫,৭৮৮ জন
  • জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার – ১২.৬৪%
  • জনঘনত্ব – ৫২৩ জন/বর্গ কিমি
  • লিঙ্গ অনুপাত – ৯৫৪ জন মহিলা/১০০০ জন পুরুষ
  • গড় সাক্ষরতার হার – ৭০.৯৫%
  • পুরুষ সাক্ষরতা – ৮১%
  • মহিলা সাক্ষরতা – ৬০.৪৪%
  • মোট শিশু জনসংখ্যা (০-৬ বছর) – ৪০৫,৪০১ জন
বাঁকুড়া জেলার অধিবাসী (People of Bankura District)
বাঁকুড়া জেলার অধিবাসী (People of Bankura District)

সীমানা


ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাঁকুড়া জেলার উত্তর সীমান্তে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা, দক্ষিণ সীমান্তে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা, পূর্বে রয়েছে হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলা এবং পশ্চিমে রয়েছে পুরুলিয়া জেলা।

নামকরণ


প্রাচীন যুগে বাঁকুড়া জেলা ছিল রাঢ় অঞ্চলের অধীনস্থ। বাঁকুড়া নামটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে নানা মতামত ও কিংবদন্তি রয়েছে। একটি মতে, এই জেলার সবচেয়ে প্রভাবশালী লৌকিক দেবতাদের একজন হলেন ধর্মঠাকুর। তাকে স্থানীয়রা বাঁকুড়া রায় নামে ডাকতেন। এই নাম থেকেই নাকি এই জায়গার নাম হয় বাঁকুড়া। আর একটি স্থানীয় কিংবদন্তি অনুসারে, জেলা সদর বাঁকুড়া শহরের নামকরণ হয়েছে এই শহরের প্রতিষ্ঠাতা তথা স্থানীয় গােষ্ঠীপতি নেতা বাঁকু রায়ের নাম অনুসারে।

ইতিহাস


বাঁকুড়া জেলার বর্তমান ভূখন্ডটি ১৭৬০ সালে মিরকাশিমের আদেশে বর্ধমান ও মেদিনীপুর জেলার সঙ্গে আংশিকভাবে এবং ১৭৬৫ সালে দেওয়ানি লাভের পর বীরভূম জেলার সঙ্গে আংশিকভাবে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক্তিয়ারভুক্ত হয়। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পর্যন্ত এই অবস্থা বজায় থাকে। এরপর ১৮০৫ সালে বাঁকুড়া ভূখন্ড জঙ্গলমহল জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়। পরবর্তীতে ১৮৩৩ সালে বিষ্ণুপুর অঞ্চলটি যুক্ত হয় বর্ধমান জেলার সঙ্গে। ১৮৩৭ সালে বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুর থানা নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলা। এরপর ১৮৪৭ সালে মানভূম জেলার ছাতনা থানা পশ্চিম বর্ধমানের অন্তর্ভূক্ত হয়। এইভাবেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা জায়গা বিচ্ছিন্ন ও সংযুক্ত হয়ে তৎকালীন পশ্চিম বর্ধমান জেলার নাম পরিবর্তন করে ১৮৮১ সালে বর্তমান এই বাঁকুড়া জেলার আত্মপ্রকাশ ঘটে।

প্রশাসনিক বিভাগ


জেলা সদর : বাঁকুড়া জেলার জেলা সদর হল বাঁকুড়া শহর।

মহকুমা : বাঁকুড়া জেলার মহকুমা ৩টি, এগুলি হল –

  • বাঁকুড়া সদর মহকুমা,
  • বিষ্ণুপুর মহকুমা ও
  • খাতড়া মহকুমা।

পৌরসভা : বাঁকুড়া জেলার পৌরসভা ৩টি, এগুলি হল –

  • বাঁকুড়া পৌরসভা,
  • বিষ্ণুপুর পৌরসভা ও
  • সােনামুখী পৌরসভা।

ব্লক : বাঁকুড়া জেলার ব্লক সংখ্যা হল ২২টি, এগুলি হল –

  • বাঁকুড়া-১,
  • বাঁকুড়া-২,
  • বড়জোড়া,
  • ছাতনা,
  • গঙ্গাজলঘাটি,
  • মেজিয়া,
  • ওন্দা,
  • শালতোড়া,
  • খাতড়া,
  • ইন্দপুর,
  • হিড়বাঁধ,
  • রানিবাঁধ,
  • রায়পুর,
  • সারেঙ্গা,
  • সিমলাপাল,
  • তালডাংরা,
  • বিষ্ণুপুর,
  • ইন্দাস,
  • জয়পুর,
  • পাত্রসায়ের,
  • কোতুলপুর
  • সোনামুখী

থানা : বাঁকুড়া জেলায় ২৩টি থানা রয়েছে।

শহর :  বাঁকুড়া জেলায় রয়েছে ১২টি শহর।

পঞ্চায়েত সমিতি : বাঁকুড়া জেলায় ২২টি পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে।

গ্রাম পঞ্চায়েত : বাঁকুড়া জেলায় ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে।

গ্রাম : বাঁকুড়া জেলায় ৫,১৮৭টি গ্রাম রয়েছে।

মৌজা : বাঁকুড়া জেলায় ৩,৮২৮টি মৌজা রয়েছে।

গ্রাম সংসদ : বাঁকুড়া জেলায় ১,৮৯৬টি গ্রাম সংসদ রয়েছে।

জেলা পরিষদ : বাঁকুড়া জেলার জেলা পরিষদের সংখ্যা ১টি।

লােকসভা কেন্দ্র : বাঁকুড়া জেলায় লােকসভা কেন্দ্র রয়েছে ২টি, একটি বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র ও আর একটি বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র।

বিধানসভা কেন্দ্র : বাঁকুড়া জেলায় বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে ১২টি, এগুলি হল –

  • সালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্র,
  • ছাতনা বিধানসভা কেন্দ্র,
  • রাণীবাঁধ বিধানসভা কেন্দ্র,
  • রায়পুর বিধানসভা কেন্দ্র,
  • তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্র,
  • বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্র,
  • বড়জোড়া বিধানসভা কেন্দ্র,
  • ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্র,
  • বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্র,
  • কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র,
  • ইন্দাস বিধানসভা কেন্দ্র ও
  • সােনামুখী বিধানসভা কেন্দ্র।

দাপ্তরিক ওয়েবসাইট : https://bankura.gov.in/

ভূ-প্রকৃতি


পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা এই বাঁকুড়া জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্যও অপরূপ। বাঁকুড়া জেলা পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ছােটনাগপুর মালভূমি ও নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমির মধ্যবর্তী অংশে অবস্থিত। এই জেলাকে “পূর্বের বঙ্গীয় সমভূমি ও পশ্চিমের ছোটোনাগপুর মালভূমির মধ্যকার সংযোগসূত্র” বলে বর্ণনা করা হয়। বাঁকুড়া জেলার পশ্চিম দিকে রয়েছে ল্যাটেরাইট গঠিত পাহাড় শ্রেণি, উপত্যকা, গভীর অরণ্য ও শিলাস্তূপময় বন্ধুর ভূমিভাগ। শুশুনিয়া ও বিহারীনাথ এই অঞ্চলের উল্লেখযােগ্য পাহাড়। আর পূর্বে রয়েছে শিলাস্তূপ, নিম্ন শৈলশিরা ও উপত্যকাযুক্ত মধ্যভাগের অসমতল ভূমিভাগ।

শুশুনিয়া পাহাড় (Susunia Hill, Bankura District)
শুশুনিয়া পাহাড় (Susunia Hill, Bankura District; Photo Source – WikiMedia; Author – Paulsub)

বাঁকুড়া জেলার পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভাগের জমি নিচু ও উর্বর পলিমাটিযুক্ত এবং পশ্চিম ভাগের জমি ধীরে ধীরে উঁচু হয়েছে। এই অঞ্চলে জায়গায় জায়গায় ছোটোখাটো টিলা দেখতে পাওয়া যায়। বাঁকুড়া জেলার দীর্ঘতম পাহাড় হল বিহারিনাথ পাহাড়।

নদ-নদী


বাঁকুড়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত উল্লেখযােগ্য নদনদীগুলি হল দামােদর নদ, দ্বারকেশ্বর, কংসাবতী নদী, শিলাবতী নদী, গন্ধেশ্বরী নদী ইত্যাদি।

জলবায়ু


বাঁকুড়া জেলার জলবায়ু উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির। এই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। জেলার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমান ১,৪০০ মিমি।

বিষ্ণুপুর (Bishnupur, Bankura District)
বিষ্ণুপুর (Bishnupur, Bankura District)

অর্থনীতি


বাঁকুড়া জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। জেলার মোট শ্রমশক্তির ৩১% কৃষক ও ৩৫% কৃষিমজুর। জেলার ৫০% জমিতেই কৃষিকাজ হয়। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির সাহায্যে জেলার মোট কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।

এই জেলার বিভিন্ন শিল্পগুলিও জেলার অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, বাঁকুড়া একটি খনিজ সমৃদ্ধ জেলা। শালতোড়া, মেজিয়া, বড়জোড়া ও গঙ্গাজলঘাটি অঞ্চলের কয়লা, থানাপাহাড়, চেরাডংরি অঞ্চলের টাংস্টেন, রানিবাঁধ থানার ঝিলিমিলি অঞ্চলের অভ্র ও রাইপুর অঞ্চলের চিনামাটি এই জেলার উল্লেখযোগ্য খনিজ।

কৃষিকাজ


বাঁকুড়া জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। এই জেলায় বসবাসকারী ১০০ জনের মধ্যে ৮২ জনই কৃষিজীবী। তাছাড়া এই জেলার অনুকুল পরিবেশে কৃষিকাজও অনেক ভালাে হয়। জেলাটিতে ধান, গম, পাট, আলু থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি, ফলমূল ও তৈলবীজ উৎপাদিত হয়।

শিল্প


বাঁকুড়ায় বৃহদায়তন শিল্প গড়ে না উঠলেও ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পে এই অঞ্চল ঐতিহ্যবাহী খ্যাতি লাভ করেছে। লাল ধুপছায়া শাড়ি, রেশম ও সুতি মিশ্রিত খুটনি কাপড়, ফুলম শাড়ি ও বিশেষত বিষ্ণুপুরের বালুচরি শাড়ি জগৎ বিখ্যাত। এছাড়াও পাথর কেটে দেবদেবীর মূর্তি ও থালাবাসন তৈরির শিল্প, পিতলের ডােকরা শিল্প আজ দেশ-বিদেশে লােকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।

বাঁকুড়ার সাংস্কৃতিক আইকন হল ঘােড়া। এই জেলার পােড়ামাটির কারুকাজ করা বাঁকুড়া ঘােড়া আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেছে। হাতি, ঘােড়া ও মনসার ঝাঁপি তৈরির জন্য খাতড়া মহকুমার তালডাংরা ব্লকের পাঁচমুড়া গ্রামটি বিখ্যাত।

ভাষা


বাঁকুড়া জেলায় বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষদের প্রধান ভাষা হল বাংলা, তবে এই জেলায় সাঁওতালি, কুরমালী, হিন্দি প্রভৃতি আরাে অন্যান্য ভাষাও প্রচলিত।

ধৰ্ম


২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, বাঁকুড়া জেলার মোট জনসংখ্যার ৮৪.৩৪% মানুষ হিন্দু ধৰ্ম, ৮.০৮% মানুষ ইসলাম ধৰ্ম, ৭.২৫% মানুষ উপজাতীয় ধর্ম এবং বাকি মানুষেরা অন্যান্য ধৰ্ম পালন করেন।

শিক্ষা


বাঁকুড়া জেলার মােট সাক্ষরতার হার ৭০.৯৫ শতাংশ। এই জেলার উল্লখযােগ্য কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হল –

  • বাঁকুড়া ইউনিভার্সিটি,
  • বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজ,
  • বাঁকুড়া সম্মিলনি কলেজ,
  • গােবিন্দ প্রসাদ মহাবিদ্যালয়,
  • যামিনী রায় কলেজ,
  • পাঁচমুড়া মহাবিদ্যালয়,
  • সােনামুখী কলেজ,
  • কে. জি. ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট,
  • বাঁকুড়া গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক কলেজ,
  • বাঁকুড়া সম্মিলনি মেডিক্যাল কলেজ ইত্যাদি।

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য


বাঁকুড়া তার ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির কারুকাজের জন্য বিখ্যাত। গ্রামবাসীদের বেশিরভাগ কৃষক এবং অন্যান্য লোকেরা কাঠমিস্ত্রি, কুমোর ইত্যাদি কাজ করেন। পোড়ামাটির কারুকাজ করা “বাঁকুড়ার ঘোড়া” আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি অর্জন করেছে এবং এই ঘোড়া বাঁকুড়া জেলার সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান আইকন।

সাঁওতাল, ভূমিজ (সর্দার) এবং মুন্ডার মতো উপজাতিগুলি মুকুটমণিপুর অঞ্চলে বাস করে। এখানকার আদিবাসীরা প্রোটো-অস্ট্রোলয়েড জাতির অন্তর্ভুক্ত। এদের প্রধান খাবার ভাত। চর্পা পিঠা একটি বিশেষ খাদ্য, যার বাইরের অংশে ভাত এবং কিমা করা মাংসের পুর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়; শাল পাতায় এটি ভাপিয়ে নেওয়া হয় এবং তারপর খাওয়া হয়।

বাঁকুড়া জেলার ঝুমুর নৃত্য (Jhumur Dance of Bankura District)
বাঁকুড়া জেলার ঝুমুর নৃত্য (Jhumur Dance of Bankura District; Photo Source – https://bankura.gov.in/culture-heritage/)

বাঁকুড়া জেলার লোকেরা নাচ গান করতে খুবই ভালোবাসেন। ঝুমুর, ছৌ, করম ইত্যাদি হল এখানকার অন্যতম লোকনৃত্য। নাচের সময় প্রাণবন্ত ফুলের মালা অলঙ্কার হিসাবে ব্যবহার করে। পুরুষ অংশগ্রহনকারীরা ঐতিহ্যবাহী সাদা ধুতি এবং পাগড়ী পরে এবং মাদলের মতো বাদ্যযন্ত্র বাজায়।

পরিবহন ব্যবস্থা


বাঁকুড়া জেলায় পরিবহন ব্যবস্থা হিসাবে উন্নত সড়কপথ তাে রয়েছেই, সঙ্গে রেলপথও রয়েছে। এই জেলার কয়েকটি উল্লেখযােগ্য রেলওয়ে স্টেশন হল বাঁকুড়া জংশন রেলওয়ে স্টেশন, বিষ্ণুপুর রেলওয়ে স্টেশন, ওন্দগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, ছাতনা রেলওয়ে স্টেশন ইত্যাদি।

বিশিষ্ট ব্যক্তি


বাঁকুড়া জেলার কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি হলেন –

  • রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় : বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক ছিলেন।
  • কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় : বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষিকা ছিলেন।
  • রামকিঙ্কর বেইজ : একজন ভারতীয় বাঙালী ভাষ্কর ছিলেন।
  • ননীবালা গুহ : বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজসেবক, যিনি বাঁকুড়ার গান্ধীবুড়ি নামে পরিচিত ছিলেন। – প্রমুখ।

দর্শনীয় স্থান


বাঁকুড়া জেলার উল্লেখযােগ্য দর্শনীয় স্থানগুলি হল –

  • মুকুটমণিপুর

একটি আদর্শ দর্শণীয় স্থান যেখানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধটি মুকুট এর মতাে রহস্যময় টিলা দ্বারা বেষ্টিত। নীল জলের নির্মল প্রকৃতি, সবুজ বন এবং টিলাঘেরা দুটি নদীর সঙ্গমে অবস্থিত, এই মুকুটমণিপুর সবুজ রঙের মােড়কযুক্ত রাঙ্গামাটির নেকলেস আকৃতির বাঁধের জন্য বিখ্যাত।

মুকুটমণিপুর (Mukutmanipur at the Time of Feasible, Bankura District)
মুকুটমণিপুর (Mukutmanipur at the Time of Feasible, Bankura District; Photo Source – https://bankura.gov.in/gallery/mukutmanipur/)
  • ঝিলিমিলি অরণ্য

বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলােমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝিলিমিলির ভ্রমণ পথের দুপাশে উন্মােচিত হয় চিত্তাকর্ষক বনের একটি পরিবর্তনশীল রূপ। কংসাবতী এই বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং এর তীরগুলি একটি আদর্শ পিকনিক স্পট। ঝিলিমিলির ওয়াচটাওয়ার আশেপাশের অঞ্চলটির সুন্দর মনোরম দৃশ্য তুলে ধরে। ঝিলিমিলি একটি শান্ত জায়গা এবং বিশেষ করে নগরবাসীর জন্য জীবনের সব ক্লান্তি কাটানোর একটি সুন্দর নির্জন আনন্দদায়ক স্থান।

ঝিলিমিলি অরণ্যের রাস্তার দৃশ্য (Jhilimili Road View, Bankura District)
ঝিলিমিলি অরণ্যের রাস্তার দৃশ্য (Jhilimili Road View, Bankura District; Photo Source – https://bankura.gov.in/gallery/jhilimili/)
  • বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুর পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার একটি মন্দির শহর। এই মন্দির শহরটি তার দুর্দান্ত ঐতিহ্য, গর্বিত সংস্কৃতি, উজ্জ্বল স্থাপত্য এবং পােড়ামাটির গল্পগুলির জন্য ভীষণ ভাবে বিখ্যাত। রাজা জগৎ মল্ল এবং তাঁর বংশধররা পােড়ামাটির ও পাথরের শিল্প দ্বারা নির্মিত অসংখ্য মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। রসমঞ্চ, মৃন্ময়ী মন্দির, জোড়বাংলাে মন্দির, শ্যাম রায় মন্দির, মদনমােহন মন্দির ইত্যাদি বিষ্ণুপুরের উল্লেখযােগ্য মন্দির।

বিষ্ণুপুর মন্দির শহর (Bishnupur Temple, Bankura District)
বিষ্ণুপুর মন্দির শহর (Bishnupur Temple, Bankura District)
  • বিহারিনাথ পাহাড়

বাঁকুড়া শহর থেকে ৫৭ কিলোমিটার এবং রানীগঞ্জ থেকে ২৪ কিমি দূরে অবস্থিত বিহারিনাথ পাহাড়টি পুরানো জৈন সংস্কৃতির সাক্ষী বলে বিবেচিত হয়। এটি বাঁকুড়া জেলার দীর্ঘতম পাহাড়। পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজের সাথে নরম বাতাসের স্পর্শ এবং চারিপাশের সবুজ মনোরম দৃশ্য মনকে করে তোলে শান্ত ও দূর করে শরীরের সব ক্লান্তি।

বিহারীনাথের পাহাড়ি দৃশ্য (Hill View of Biharinath, Bankura District)
বিহারীনাথের পাহাড়ি দৃশ্য (Hill View of Biharinath, Bankura District; Photo Source – https://bankura.gov.in/gallery/biharinath-hill/)

এছাড়াও –

  • শুশুনিয়া পাহাড়,
  • বিহারিনাথ মন্দির,
  • জয়রামবাটি,
  • রাণিবাঁধ অরণ্য ইত্যাদি।

ভিডিও ↴


বাঁকুড়া জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচয় | Explanation of Bankura District in Bengali –

আরো ভিডিও দেখুন

(Explanation of Bankura District in Bengali)

তথ্যসূত্র


Gobin
Gobinhttps://bengalknowledge24.com/
I am a Content Creator on YouTube, Facebook, Instagram and Bengal Knowledge 24 Website.

Read more

আপনার জন্য বিশেষ নিবন্ধ